ডা. বুলবুল ইসলাম 'ঈসা

কনসালটেন্ট হোমিওপ্যাথ

ডি.এইচ.এম.এস (বি.এইচ.বি)
ফাউন্ডার ডিরেক্টর- গ্লোবাল হোমিও সেন্টার

সায়াটিকা (Sciatica)

সায়াটিকা (Sciatica) বাত বা সায়াটিকার কারণ, লক্ষণ ও হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা

যা যা থাকছে-

একজন প্রশ্ন করেছেন, “সায়াটিকা বাতের জন্য কোন ওষুধ খেতে হবে?”
এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আগে সংক্ষেপে আমরা সায়াটিকা বাত সম্পর্কে জেনে নিই।

সায়াটিকা (Sciatica) বাত কী?

মেরুদন্ডের (Spine) শেষ প্রান্তের দিকে lumbar এবং sacrum রিজিওন থেকে উৎপন্ন ৫ টি নার্ভ (L4, L4, S1. S2. S3) সংযুক্ত বা একত্রিত হয়ে মানবদেহের সব থেকে বড় এবং দীর্ঘ নার্ভ গঠিত হয়েছে যার নাম সায়াটিক (Sciatic) নার্ভ। মানব দেহের দুই পাশে দুই সায়াটিক নার্ভ রয়েছে যা পিছন দিক দিয়ে হিপ এবং থাই হয়ে হাঁটুর কাছাকাছি গিয়ে কয়েকটি অংশে বিভক্ত হয়ে পা পর্যন্ত চলে গিয়েছে।

কোন কারনে এই সায়াটিক (Sciatic) নার্ভে ব্যথা, জ্বালা, ঝিনঝিন করা বা অবস ভাব দেখা দিলে তাকে মেডিকেলের পরিভাষায় সায়াটিকা (Sciatica) বলা হয়। বাত ব্যথার মত ব্যথা থাকায় অনেকেই এটাকে সায়াটিকা না বলে সায়াটিকা বাত বলে অভিহিত করে।

সায়াটিকা (Sciatica) বাতের কারণ কী?

কোন কারনে সায়াটিক নার্ভ (Sciatic nerve) এর স্বাভাবিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটলে তখন সায়াটিকা (Sciatica) বা সায়াটিকা বাতের সূচনা হয়। কী কী কারণে ঘটতে পারে এমন ঘটনা?

১। আঘাত লাগলে,
২। স্পাইনাল ডিস্ক প্রল্যাপ্স হলে,
৩। স্পাইনাল ডিস্ক ডিজেনারেশান বা ক্ষয় হলে,
৪। মেরুদন্ডে বড় ধরনের চাপ পড়লে, ইত্যাদি।

সায়াটিকা (Sciatica) বাতের লক্ষণ কী?

সায়াটিকার লক্ষণ গুলো মোটামুটি নিম্নরূপঃ

১। ব্যাথা,
২। মাংস পেশীর দূর্বলতা,
৩। অবস ভাব,
৪। ঝিনঝিন অনুভূতি,
৫। পা, মূত্রযন্ত্র সহ সায়াটিক নার্ভের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত অঙ্গ সমূহের কার্যকলাপে বিঘ্ন, ইত্যাদি।

সায়াটিকা (Sciatica) বাতের প্রচলিত চিকিৎসাঃ

সাধারণ বাত রোগের মত এলোপ্যাথিতে সাধারণত এন্টিবায়োটিক, পেইনকিলার, মালিশ প্রভৃতি ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। তবে হোমিওপ্যাথিতে এর সুন্দর চিকিৎসা রয়েছে।

সায়াটিকা (Sciatica)বা সায়াটিকা বাতের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসাঃ

হোমিওপ্যাথি একটি লক্ষণভিত্তিক আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি। এখানে রোগের নামের চেয়ে ওই রোগে রোগীর দেহ-মনে কোন ধরনের লক্ষণ উৎপন্ন হয়েছে তার উপর অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয় এবং সেই সমস্ত লক্ষণের সমন্বয়েই একজন রোগীর জন্য প্রতিবারে একটি মাত্র ঔষধ নির্বাচন করা হয়।
কাজেই কোন নির্দিষ্ট রোগের ওপরে কোন নির্দিষ্ট ঔষধ হোমিওপ্যাথিতে হতে পারে না। রোগীর শারীরিক এবং মানসিক লক্ষণ গুলোর সমন্বয়ে হোমিওপ্যাথিক বাক্সের যে কোন ঔষধই একজন রোগীর জন্য প্রযোজ্য হতে পারে।

কিন্তু দুঃখের বিষয় অনেক সময় দেখা যায় আশেপাশের অনেক তথাকথিত হোমিওপ্যাথ নির্দিষ্ট রোগের জন্য কিছু নির্দিষ্ট মেডিসিন নির্ধারণ করে রাখে। এবং রোগী এলে তার মধ্য থেকেই একটা বা কয়েকটা ঔষধ দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু এটা একটা মস্ত বড় ভুলপদ্ধতি। এ কারণেই দেখা যায় এই শ্রেণীর অধিকাংশ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকই রোগীকে সুস্থ করতে ব্যর্থ হয়। এই জাতীয় হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের সংখ্যা বেশি হওয়ায় প্রায়ই দেখা যায় রোগীরা এই ধরনের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকদের একজনের কাছ থেকে অন্য জনের কাছে ঘুরে ঘুরে প্রকৃত আরোগ্য না পেয়ে শেষে হোমিওপ্যাথিরই বদনাম করে যে, “হোমিওপ্যাথি ভালো না।”।

যেমন এই সায়াটিকা (Sciatica) বাতের ক্ষেত্রেও Arnica mont, arsenic album, Kali hydro, Viscum alb, Bryonia alb, Dioscorea, Causticum, Colocynth, rhus tox, প্রভৃতি ঔষধ গুলো অধিক মাত্রায় ব্যবহৃত হয়ে থাকে। কিন্তু প্রকৃত হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকরা এভাবে রোগ ভিত্তিক চিকিৎসা করেন না। তারা রোগীর যাবতীয় শারীরিক এবং মানসিক লক্ষণ সংগ্রহ করে তার ওপর ভিত্তি করে একটি সিমিলিমাম ঔষধ নির্বাচন করেন। আর সেই ঔষধটি হোমিওপ্যাথিক বাক্সের যে কোন ঔষধই হতে পারে যা আগেই বলেছি।


কাজেই এই ধরনের রোগে আক্রান্ত রোগীদেরকে একজন নির্ভরযোগ্য হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের কাছে গিয়ে তার যাবতীয় সমস্যা খুলে বলতে হবে। চিকিৎসক তার প্রজ্ঞা এবং মেধা দিয়ে বিচার-বিশ্লেষণ করে একটি মাত্র হোমিওপ্যাথিক ঔষধ রোগীকে খেতে দিবেন এবং তাতেই রোগী সুস্থ হবেন।

নির্ভরযোগ্য চিকিৎসক নির্বাচনের উপায় জানতে এখানে ক্লিক করুন

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp