ডা. বুলবুল ইসলাম 'ঈসা

কনসালটেন্ট হোমিওপ্যাথ

ডি.এইচ.এম.এস (বি.এইচ.বি)
ফাউন্ডার ডিরেক্টর- গ্লোবাল হোমিও সেন্টার

Gonorrhea

গনোরিয়া: কারণ, লক্ষণ, প্রচলিত ও হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা

যা যা থাকছে-

গনোরিয়ার কারণ, লক্ষণ কিংবা গনোরিয়ার হোমিওপ্যাথিক ঔষধ বা চিকিৎসা কী বা কেমন তা জানতে অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন। তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেল।

ওভারভিউ

গনোরিয়া (Gonorrhea) কী?

গনোরিয়া হচ্ছে প্রধান যৌন সংক্রামক রোগ (sexually transmitted infection-STI) গুলোর মধ্যে একটি যা Neisseria gonorrhoeae (N. gonorrhoeae) নামক ব্যাকটেরিয়া থেকে সৃষ্টি হয়।

যৌনতায় সক্রিয় রয়েছেন এমন যেকোনো বয়সের নারী-পুরুষ গনোরিয়ায় আক্রান্ত হতে পারেন এবং তাদের যৌন সংগীকেও আক্রান্ত করতে পারেন।

কারণ

গনোরিয়ার কারণ কী?

মূলত Neisseria gonorrhoeae (N. gonorrhoeae). নামক ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের ফলেই গনোরিয়া রোগের সৃষ্টি বা উৎপত্তি হয়। এই ব্যকটেরিয়া সাধারণত যৌনাঙ্গের স্রাব সমূহ যেমন semen বা বীর্য, vaginal fluid বা যোনিরস প্রভৃতির মাধ্যমে সংক্রামিত হয়ে থাকে।

গনোরিয়ায় আক্রান্ত অর্থাৎ Neisseria gonorrhoeae (N. gonorrhoeae). নামক ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত যে কোন নারী বা পুরুষের সাথে যেকোনো ধরনের অরক্ষিত যৌন মিলন যথা ভেজাইনাল সেক্স বা যোনীপথে সঙ্গম, এনাল সেক্স বা পায়ুপথে সঙ্গম, ওরাল সেক্স বা মুখ মৈথুন প্রভৃতির মাধ্যমে আপনি গনোরিয়া তে আক্রান্ত হতে পারেন।

গনোরিয়া আক্রান্ত স্ত্রী লোকের গর্ভের সন্তানেরও প্রসবকালীন সময়ে গনোরিয়া সংক্রমণ ঘটতে পারে।

অনেক সময় গনোরিয়া তে আক্রান্ত মহিলার সন্তান প্রসবে সহযোগিতা করা ব্যক্তিদেরও গনোরিয়ার সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে।

 

আবার গনোরিয়া আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত যৌন খেলনা (sex toy) জীবাণুমুক্ত না করে যদি অন্য কোন সুস্থ মানুষ ব্যবহার করে তাহলেও গনোরিয়া সংক্রমনের সুযোগ থাকে।

লক্ষণ

গনোরিয়ার লক্ষণ কী?

বহু ক্ষেত্রে গনোরিয়া আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে কোন সিম্পটম বা লক্ষণ দেখা যায় না। তবে যাদের মধ্যে লক্ষণ তৈরি হয় তাদের মধ্যে লিঙ্গ ভেদে সে সমস্ত লক্ষণ কিছুটা ব্যাতিক্রম হয়ে থাকে।

মহিলাদের মধ্যে গনোরিয়ার লক্ষণ-

গনোরিয়ায় আক্রান্ত প্রায় ৫০ শতাংশ বা অর্ধেক স্ত্রীলোকের মধ্যে গনোরিয়ার তেমন কোন লক্ষণ প্রকাশ পায় না। অনেক সময় তাদের যৌনাঙ্গ থেকে নিঃসৃত গনোরিয়া স্রাবকে তারা সাধারণ লিউকোরিয়া বা সাদাস্রাব বলে মনে করে। ফলে তাদের অজান্তেই তাদের যৌন সংগীতের মধ্যে এই ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত হয়। কাজেই আপনি যদি যৌনভাবে সক্রিয় হন এবং আপনার যদি মনে হয় যে গনোরিয়া আছে এমন কারো সাথে আপনার যৌন সম্পর্ক রয়েছে তবে গনোরিয়ার জন্য পরীক্ষা করাটা আপনার জন্য অনেকটাই অপরিহার্য।

যাইহোক, উপসর্গ উপস্থিত হলে মহিলাদের মধ্যে নিম্নোক্ত লক্ষণগুলো লক্ষ্য করা যায়:


১. অস্বাভাবিক যোনি স্রাব (সাদা বা হলুদ)।

২. তলপেটে বা শ্রোণীতে ব্যথা।

৩. যৌন মিলনের সময় ব্যথা (dyspareunia)।

৪. প্রস্রাব করার সময় ব্যথা হয় (Dysuria)।

৫. ২ পিরিয়ডের পিরিয়ডের মধ্যবর্তী সময়েও রক্তপাত।

পুরুষদের মধ্যে গনোরিয়ার লক্ষণ-

গনোরিয়ায় আক্রান্ত অনেক নারীদের মত অনেক পুরুষদের মধ্যেও গনোরিয়ার লক্ষণ প্রকাশ পায় না। ফলে তারাও তাদের নিজেদের অজান্তেই তাদের যৌন সঙ্গীকে সংক্রামিত করতে পারে। তবে যাদের মধ্যে লক্ষণ প্রকাশ পায় তাদের মধ্যে সাধারণত নিম্নোক্ত লক্ষণ গুলোই বেশি দেখা যায়:

১. লিঙ্গ থেকে সাদা, হলুদ বা সবুজ রঙের স্রাব।

২. প্রস্রাব করার সময় ব্যথা বা জ্বালা যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে গুরুতর হয়ে থাকে।

৩. অন্ডকোষে ব্যথা এবং অণ্ডকোষ ফুলে যাওয়া।

যৌনাঙ্গ ব্যতীত অন্যান্য স্থানে গনোরিয়ার লক্ষণঃ

যে কেউ ওরাল সেক্সের মাধ্যমে তাদের গলায় বা  এনাল সেক্সের মাধ্যমে তাদের মলদ্বারে গনোরিয়া সংক্রমণ পেতে পারে। যদিও এ ধরনের ঘটনা সচরাচর দেখা যায় না তবুও বর্তমান আধুনিক ইন্টারনেটের যুগে পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত জেনারেশনের মধ্যে এই ধরনের ঘটনা একেবারেই বিরল নয়।

গলায় আক্রান্তদের লক্ষণ:

১. চুলকানি অনুভূতি
২. গলার ভেতর চিরে যাওয়ার মত অনুভূতি,
৩. গলা ব্যথা,
৪. গিলতে সমস্যা।

মলদ্বারে আক্রান্তদের লক্ষণ:

১. চুলকানি,
২. স্রাব নির্গত হওয়া,
৩. মলত্যাগ করার সময় ব্যথা।

রোগ নির্ণয়

গনোরিয়ার রোগ নির্ণয় পদ্ধতি কী?

গনোরিয়া আছে অথবা হতে পারে কিংবা হয়েছে কিনা এমন সব সন্দেহ বা প্রশ্ন নিয়ে আপনি যখন একজন চিকিৎসকের কাছে যাবেন অথবা আপনার চিকিৎসক যখন সন্দেহ করবেন যে আপনার গনোরিয়া হতে পারে তখন তিনি আপনার যৌন জীবন এবং সাম্প্রতিক যৌন কার্যকলাপ সম্পর্কে প্রশ্ন করবন। এবং সবশেষে নিশ্চিত হওয়ার জন্য আপনার প্রস্রাব এবং আক্রান্ত অঙ্গ যথা যৌনাঙ্গ, মলদ্বার, গলা অথবা চোখ থেকে নিঃসৃত স্রাব নিয়ে পরীক্ষা করাবেন যে তাতে Neisseria gonorrhoeae (N. gonorrhoeae). নামক ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি আছে কিনা। এমনকি আপনার কাছ থেকে ব্লাড স্যাম্পল নিয়েও টেস্ট করানো হতে পারে। আর এভাবেই আপনার গনোরিয়া সংক্রমণ সম্পর্কে নিশ্চিত হবেন।

গনোরিয়ার টেস্ট / পরীক্ষা কী কী?

গনোরিয়ার টেস্ট বা পরীক্ষাগুলোর মধ্যে কালচার টেস্ট এবং VDRL টেস্ট উল্লেখযোগ্য।

Gonorrhea test

চিকিৎসা ও ব্যাবস্থাপনা

গনোরিয়ার চিকিৎসা কী?

গনোরিয়া একটি নিরাময় যোগ্য রোগ। ভিন্ন ভিন্ন চিকিৎসা পদ্ধতিতে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে গনোরিয়া রোগীদের চিকিৎসা করা হয়ে থাকে।

গনোরিয়ার অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসা

প্রচলিত তথা অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসা পদ্ধতিতে এন্টিবায়োটিক হচ্ছে গনোরিয়ার প্রধান এবং একমাত্র চিকিৎসা। অ্যান্টিবায়োটিক গুলোর মধ্যে রয়েছে কিছু ইনজেকশন টাইপ যেমন ceftriaxone, এবং কিছু ট্যাবলেট/ক্যাপসুল টাইপ, যেমন gentamicin, azithromycin ইত্যাদি। এছাড়াও doxycycline সহ অন্যান্য কিছু মেডিসিন প্রেসক্রিপশন করা হয়ে থাকে।

গনোরিয়ার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা

অন্যান্য আরো বহু রোগের মত গনোরিয়ার রোগীদের চিকিৎসাতেও হোমিওপ্যাথি একটা কার্যকরী চিকিৎসা পদ্ধতি। এটি অনুগ্র এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া মুক্ত।

অন্যান্য সকল রোগের মত গনোরিয়ার চিকিৎসার ক্ষেত্রেও হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার রুল একটাই-

প্রপার কেইস টেকিং> এভালুয়েশান অব সিম্পটম> ফাইন্ড আউট দ্যা সিমিলিমাম রেমিডি> এপলাই উইথ দ্যা মিনিমাম ডোজ এন্ড রাইট পটেন্সি!

আর তাতেই রোগী সুস্থ্য, রোগ নির্মূল।

গনোরিয়ার লক্ষণ ত উপরেই বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে, কিন্তু ওগুলো হচ্ছে রোগের কথা। যা প্রায় প্রতিটি রোগীতেই সমান। একজন প্রকৃত হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক কখনোই গনোরিয়া নাম শুনেই বা গনোরিয়া আছে নিশ্চিত হলেই রোগীকে ঔষধ দিবেন না। তিনি গনোরিয়া রোগে আক্রান্ত প্রত্যেকটি রোগীকে আলাদা আলাদা ভাবে মূল্যায়ন করবেন। প্রত্যেকটি রোগীর ব্যাক্তিগত লক্ষণাবলী সংগ্রহ করবেন এবং তার ওপর বেইস করে প্রপার হোমিওপ্যাথিক ঔষধ নির্বাচন করবেন। এবং এসব ক্ষেত্রে প্রায়ই দেখা যায় একই চিকিৎসকের চিকিৎসা হলেও প্রত্যেকটা মানুষ ভিন্ন ভিন্ন হওয়াতে তাদের ভেতরকার লক্ষণও ভিন্ন ভিন্ন হয় এবং প্রেসক্রিপশনকৃত ঔষধও আলাদা আলাদা হয়। আর ডাক্তারের নির্বাচন যদি সঠিক হয় তাহলে এই আলাদা আলাদা ওষুধেই আলাদা আলাদা রোগীর গনোরিয়া ভালো হয়।

গনোরিয়ার হোমিওপ্যাথিক ওষুধ গুলো কী কী?

একথা আগেই আলোচনা হয়েছে যে গনোরিয়া নাম করে হোমিওপ্যাথিতে নির্দিষ্ট কোন ঔষধ নেই। কেবল গনোরিয়া কেন কোন রোগের নামেই হোমিওপ্যাথিতে কোন ওষুধ নেই। হোমিওপ্যাথি একটি লক্ষণ ভিত্তিক চিকিৎসা পদ্ধতি। আর এই লক্ষণ কেবল শারীরিক নয় মানসিকও বটে। অর্থাৎ গনোরিয়া আক্রান্ত ব্যক্তির শারীরিক এবং মানসিক লক্ষণগুলোকে এভালুয়েশনের মাধ্যমে হোমিওপ্যাথিক ঔষধ নির্বাচন করা হয়। আর এ কারণেই হোমিওপ্যাথিতে একই নামের রোগে আক্রান্ত আলাদা আলাদা রোগীতে আলাদা আলাদা ঔষধ সূচিত হয়।

গনোরিয়ার চিকিৎসায় মেডিসিনের পাশাপাশি আনুষঙ্গিক ব্যাবস্থাপনা কী?

১। গনোরিয়া ছড়িয়ে পড়া রোধে সকল ধরনের যৌন মিলন থেকে বিরত থাকা।

২। আন্ডারগার্মেন্টস এবং সেক্সটয় সমূহ শেয়ার না করা।

ঝুঁকি ও জটিলতা

কাদের গনোরিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি?

মূলত গনোরিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের সাথে যৌন মিলনের মাধ্যমেই সাধারণত গনোরিয়া সংক্রমণ হয়ে থাকে। আর এ ধরনের যৌন মিলনের সম্ভাবনা সাধারণত নিম্নোক্ত শ্রেণীর ব্যক্তিদের মধ্যেই বেশি থাকে। যথা-

১। যাদের বয়স ২৫ বছরের কম। এটা সাধারণত এদের মধ্যে সাধারণত যৌন চাহিদা বেশি থাকে কিন্তু পারিবারিক এবং সামাজিক বিভিন্ন রীতিনীতি ও সংস্কারের কারণে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে পারে না। ফলে যৌন চাহিদা মেটানোর জন্য পতিতা পল্লীসহ নানান স্থানে নানান যৌন কর্মী বা যৌন সঙ্গীর সাথে যৌন মিলন করে।

২। যারা বিভিন্ন পরিবহন সেক্টরে কাজ করে, যেমন ট্রাক ড্রাইভার, জাহাজের নাবিক প্রভৃতি। তারা সাধারণত বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বাড়ির বাইরে বিভিন্ন স্থানে চলাফেরা করে এবং অবস্থান করে। আর যৌন চাহিদা মেটানোর জন্য বিভিন্ন পতিতা পল্লীতে গিয়ে যৌনকর্মীর সাথে যৌন মিলন করে।

গনোরিয়া (Gonorrhea)

৩। যারা পরকীয়া গ্রস্থ। এরা সাধারণত নির্দিষ্ট যৌন সঙ্গীতে সীমাবদ্ধ থাকতে চায় না। ফলে নানান ধরনের মানুষের সাথে যৌন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে।

গনোরিয়ার জটিলতা সমূহ কী কী?

 

সময় মত সঠিকভাবে চিকিৎসা না হলে গনোরিয়া আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে নানান ধরনের জটিলতা দেখা দিয়ে থাকে। লিঙ্গ ভেদে গনোরিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের লক্ষণগুলো যেমন কিছুটা আলাদা আলাদা হয় তেমনি লিঙ্গ ভেদে জটিলতাগুলো কিছুটা আলাদা আলাদা হয়। 

পুরুষ রোগীদের জটিলতা-

১। বন্ধ্যাত্ব।
২। মূত্রনালীতে ক্ষত।
৩। অণ্ডকোষের প্রদাহ।
৪। প্রস্টেট গ্লান্ডে ব্যথা এবং প্রদাহ।
৫। ইউরেথ্রাল স্ট্রিকচার ইত্যাদি।

মহিলা রোগীদের জটিলতা-

১। ইনফেকশান জরায়ু এবং ফ্যালোপিয়ান টিউব সহ অন্যান্য প্রজনন অঙ্গে ছড়িয়ে পড়া।
২। পেলভিক প্রদাহজনিত রোগের সৃষ্টি হওয়া।
৩। বন্ধ্যাত্ব এবং একটোপিক গর্ভাবস্থার তৈরি হওয়া।
৪। প্রসবকালীন সময়ে নবজাতকের চোখে সংক্রমণ হওয়া যা চিকিৎসা না করা হলে শিশুদের অন্ধত্বের দিকে নিয়ে যায়।

আনুষঙ্গিক প্রশ্নোত্তর

গনোরিয়ার লক্ষণ দেখা দিতে কত দিন লাগে?

একথা আগেই বলা হয়েছে যে, গনোরিয়া অর্থাৎ Neisseria gonorrhoeae (N. gonorrhoeae) নামক ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের দীর্ঘকাল পরেও অনেকের শরীরে কোন লক্ষণ দেখা নাও দিতে পারে। তবে যাদের ভেতর লক্ষণ প্রকাশ পায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে গড়ে দুই সপ্তাহ অর্থাৎ ১৪ দিনের মধ্যেই সেগুলো প্রকাশিত হয়।

গনোরিয়া কি ভালো হয়?

গনোরিয়া একটি নিরাময়যোগ্য রোগ। প্রপার চিকিৎসা পেলে ১ থেকে ২ সপ্তাহের মধ্যেই গোনোরিয়া ভাল হয়ে যায়।

একবার গনোরিয়া ভালো হলে তার কি আবারো গনোরিয়া হতে পারে?

অন্যান্য প্রায় সকল রোগের মতোই গনোরিয়ার ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য যে, চিকিৎসা গনরিয়া ভালো করতে পারে কিন্তু গনোরিয়ার পুনরাক্রমণ ঠেকাতে পারে না। কাজেই গনোরিয়া থেকে বাঁচতে হলে আপনাকে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।

গনোরিয়ার চিকিৎসা করতে কত সময় লাগে?

প্রপার চিকিৎসা পেলে গনোরিয়া সাধারণত এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যেই আরোগ্য হয়ে যায়। তবে নানান গনোরিয়া মাধ্যমে গনোরিয়া সাপ্রেসড হলে, এবং জটিল অবস্থা প্রাপ্ত হলে গনোরিয়া চিকিৎসা করতে অধিক সময় লেগে যায়।

গনোরিয়া কি ছোঁয়াচে রোগ?

সাধারণ স্পর্শে গনোরিয়া সংক্রমিত হয় না। কাজেই গনোরিয়া ছোঁয়াচে নয়।

তবে গনোরিয়া সংক্রমনের জন্য যোনিতে লিঙ্গ প্রবেশ বাধ্যতামূলক নয়, ফোর প্লে বা সোহাগ আলিঙ্গনের সময় সুস্থ ব্যক্তির যৌনাঙ্গ যদি উন্মুক্ত বা নগ্ন অবস্থায় আক্রান্ত ব্যক্তির যৌনাঙ্গের সংস্পর্শে যায় তাতেও যৌনাঙ্গ থেকে নিঃসৃত স্রাব সমূহের মাধ্যমে এই ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত হতে পারে।

তবে গনোরিয়া আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে নিম্নোক্ত সংস্পর্শগুলোতে আসলে গনোরিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।

১। চুম্বন, আলিঙ্গন বা হাত ধরা।
২। একই পাত্রে খাবার বা পানীয় গ্রহণ করা।
৩। একই টয়লেট ব্যবহার.করা।
৪। শ্বাসের মাধ্যে আক্রান্ত ব্যক্তির কাশি বা হাঁচির ফোঁটা সুস্থ ব্যক্তির ভেতরে প্রবেশ করা।

গনোরিয়ায় আক্রান্ত হলে করনীয় কী?

১। তাদের মাধ্যমে যেন তাদের সঙ্গীরা আক্রান্ত না হয় সেজন্য তাদের সঙ্গে যৌন মিলন থেকে বিরত থাকতে হবে।
২। যথাসম্ভব দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

গনোরিয়া চিকিৎসায় কি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছে?

প্রচলিত তথায এলোপ্যাথিক চিকিৎসা পদ্ধতিতে চিকিৎসা করা হলে অনেক সময় অ্যান্টিবায়োটিক ডোজের কারণে রোগীতে নানান ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। কিন্তু এদিক দিয়ে হোমিওপ্যাথি সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া মুক্ত।

গনোরিয়া প্রতিরোধে করনীয় কী?

গনোরিয়া প্রতিরোধের জন্য কোন ভ্যাকসিন নেই। তবে আপনি চাইলে কিছু কার্যক্রমের মাধ্যমে গনোরিয়াকে প্রতিরোধ করতে পারেন বা ঝুঁকি থেকে বাঁচতে পারেন। যথা-

১। যৌন মিলনের সময় কন্ডম (condom) এবং ডেন্টাল ড্যাম dental dam ব্যবহার করা।
২। গনোরিয়া আছে এমন কারো সাথে যৌন মিলন না করা।
৩। যৌনসঙ্গী সীমিত রাখা।

গনোরিয়া চিকিৎসার কতদিন পর আবার স্বাভাবিক যৌন মিলন করা যায়?

পরীক্ষার মাধ্যমে গনোরিয়া নেগেটিভ হলেই স্বাভাবিক যৌন মিলন করা যায়। তবে এসব ক্ষেত্রে সপ্তাহখানেকের বিরতি নেয়াই সমীচীন।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp