ভেরিকোসেল কী? (What is varicocele?)
…অন্ডকোষের শিরাগুলির অস্বাভাবিক বৃদ্ধিকে ভ্যারিকোসেল বলে। ভ্যারিকোসেল অস্বস্তির কারণ হতে পারে তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটি কোন কষ্টকর উপসর্গ সৃষ্টি করে না। এটি একটি খুব কমন সমস্যা এবং শতকরা প্রায় ১০ থেকে ১৫ জন পুরুষই কম বেশী এই সমস্যায় ভুগছেন।
ভেরিকোসেল কেন হয়? (What causes varicocele?)
আমরা জানি Heart বা হৃদপিণ্ড থেকে রক্ত artery বা ধমনীর মধ্য দিয়ে শরীরে প্রবাহিত হয় এবং শরীর থেকে সেই রক্ত vein বা শিরার মধ্য দিয়ে হৃদপিন্ডে ফিরে আসে।
ঠিক সেই নিয়মে testicular artery’র মধ্যে দিয়ে রক্ত testes বা অন্ডকোষে পৌঁছায় এবং testicular vein এর মধ্য দিয়ে সেই রক্ত Inferior vena cava হয়ে হার্ট বা হৃৎপিণ্ডে ফিরে আসে।
testicular artery যেখানে অন্ডকোষের সাথে মিলিত হয়েছে ঠিক সেখানেই testicular vein ছোট ছোট শাখা প্রশাখায় বিভক্ত হয়ে testicular artery এবং শুক্রনালী কে জড়িয়ে-পেঁচিয়ে থাকে, এই অংশকে Pampiniform plexus বলে।
এখন vein বা শিরার মধ্যকার রক্তের প্রবাহকে One Way বা একমুখী করে রাখার জন্য শিরার মধ্যে কিছু valve এর ব্যবস্থা থাকে। এই valve গুলো যদি কোন ভাবে ড্যামেজ হয়ে যায় এবং ঠিকঠাক কাজ না করে তখন মধ্যাকর্ষণ বলের কারনে সমস্ত রক্তের চাপ গিয়ে শিরার নিচের অংশের দিকে পড়ে।
এক্ষেত্রেও testicular vein এর valve গুলো যদি সম্পূর্ণ বা আংশিক ড্যামেজ হয় অর্থাৎ ঠিকঠাক ভাবে কাজ না করে তাহলে উপরের দিকের সমস্ত রক্তের চাপ গিয়ে নিচের দিকে পতিত হয়। এর ফলে সেই রক্তের চাপে Pampiniform plexus ফুলে ওঠে এবং প্রসারিত হয় যাকে আমরা ভেরিকোসিল বলে থাকি।
আর এই ঘটনাকেই মূলত ভেরিকোসিলের প্রধান কারণ হিসেবে ধরা হয়।
কিন্তু আমার মতে এটা কেবলমাত্র একটা প্যাথলজিক্যাল চেঞ্জ; রোগের পরবর্তী প্রতিচ্ছবি। তাহলে এই প্যাথলজিক্যাল চেঞ্জ কেন এলো? এর পেছনের কারণ কি? কেন সেই valve গুলো ড্যামেজ হল? কেনইবা তারা ঠিকঠাক কাজ করছে না? সে সমস্ত নিয়ে বিস্তর গবেষণা দরকার রয়েছে।
যাই হোক, কারণ যেটাই হোক না কেন সঠিক সিম্পটম নিরূপণ করে প্রপার হোমিওপ্যাথিক ট্রিটমেন্ট করলে ভেরিকোসিল সম্পূর্ণভাবে আরোগ্য হওয়া সম্ভব। Because we treat the patient, not the disease.
ভেরিকোসেলের লক্ষণ কী? (What are the symptoms of varicocele?)
ভেরিকোসেল প্রায়শই তেমন কোন লক্ষণ বা উপসর্গ তৈরি করে না। তবে নিচের লক্ষণগুলো দেখা গেলে আমরা ভেরিকোসেল আছে বলে মনে করতে পারি।
১। ব্যাথাঃ এতে অন্ডকোষ এবং অন্ডকোষের শিরায় একটি নিস্তেজ, চাবানো-কামড়ানো বা থেতলে যাবার মত ব্যথা বা অস্বস্তির সম্ভাবনা বেশি থাকে। এইসব ব্যথা সাধারণত দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলেই হয়। শুয়ে পড়লে এ সমস্ত ব্যথাগুলো সাধারণত চলে যায়।
২। অণ্ডকোষে কেঁচো বা ক্রিমির থলির অনুভূতিঃ ভ্যারিকোসেল যথেষ্ট বড় হলে অণ্ডকোষের উপরে ” কেঁচো বা কৃমির ব্যাগ” এর মতো একটি বস্তু দৃশ্যমান হতে পারে। ছোট varicocele দেখতে খুব ছোট, অনেকসময় খালি চোখে দৃশ্যমান নাও হতে পারে, কিন্তু স্পর্শ দ্বারা এটি অনুভব করা যায়।
৩। ভিন্ন আকারের অণ্ডকোষঃ আক্রান্ত অণ্ডকোষটি অন্য অণ্ডকোষের তুলনায় লক্ষণীয়ভাবে ছোট হতে পারে।
ভেরিকোসেল হলে কী হয়? (What are the complications of varicocele?)
ভেরিকোসেল সাধারণত প্রাণঘাতী সমস্যা নয়, তবে এর ফলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে তীব্র ব্যথা সহ শুক্রাণুর উৎপাদন কমে যাওয়া এবং পুরুষ বন্ধ্যাত্ব সৃষ্টি হতে পারে। স্বাভাবিক যৌন ইচ্ছা ও যৌন ক্ষমতা হ্রাস পেতে পারে। অনেকসময় এটা বাড়াবাড়ির পর্যায়ে চলে গিয়ে নানান জটিলতাও তৈরি হতে পারে।
ভেরিকোসেলের চিকিৎসা কী? (What is the treatment of varicocele?)
অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন- ভেরিকোসেল কি ভাল হয়, বা এর চিকিৎসা কী? তাদের জন্য উত্তর হল, এসব ক্ষেত্রে অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসায় সাধারণত সার্জারির পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে মারাত্মক পর্যায়ের সার্জিক্যাল অবস্থা তৈরি না হলে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় খুব সহজেই কোন রকম সার্জারি ছাড়াই ভ্যারিকোসেল আরোগ্য হয়ে যায়।