দেখুন আপনি যদি মশারিও টানান আবার কয়েল ও জ্বালান তবে এটা নিশ্চিত হতে পারবেন না যে আসলে কোনটা ঠিকঠাক কাজ করছে এবং কোনটা ঠিকঠাক কাজ করছে না। সে ক্ষেত্রে পরবর্তীতে আপনি সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারবেন না যে আপনি কোনটাকে আসলে রাখবেন আর কোনটাকে ছাড়বেন।
দ্বিতীয়তঃ চিকিৎসা কার্যে এগোতে হলে পূর্ববর্তী ঔষধের কার্যকারিতা নিশ্চিত হয়ে পরবর্তী ওষধ নির্বাচন করতে হয়, এখন আপনি যদি দুটোই একসঙ্গে চালান এবং ঘটনাক্রমে সুস্থ থাকেন, তাহলে একদিকে এলোপ্যাথিক চিকিৎসক মনে করবে যে তার চিকিৎসা ঠিক আছে আবার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক মনে করবে তার ঔষধও ঠিকঠাক কাজ করছে!
এভাবে দেখা যাবে দুজনেই নিজেদের কাজকে ঠিক মনে করে তাদের পরবর্তী কার্যক্রম চালিয়ে যাবে, ওষুধের পোটেন্সি আপ করে যাবে বা নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে থাকবে।
এক্ষেত্রে দুজনের একজনে ভুল করছেন এমন হওয়াটা অত্যন্ত স্বাভাবিক, তাহলে এখন ভাবুন যে এমন ভুল ব্যবস্থা যদি আপনার উপর চলমান থাকে তাহলে দুই-চার সপ্তাহ বা দুই-চার মাস পর আপনার অবস্থা কী দাঁড়াবে!
আবার ঘটনা ক্রমে যদি দুই ধরনের ঔষধ চলমান থাকা সত্ত্বেও আপনি সুস্থ না থাকেন অথবা অবস্থা বেশি খারাপ হয় যা প্রায়শই ওষুধের ক্রিয়ার কারণেই হয়ে থাকে, তখন আপনি কাকে দায়ী করবেন?
আর সেক্ষেত্রে কাউকে দায়ী করাই তো বড় কথা নয়! যে ব্যবস্থায় সমস্যা হচ্ছে সেটা অতিসত্বর বন্ধ করতে হবে এবং সেই ওষুধের অ্যান্টি ডোট বা ক্রিয়া নাশক প্রয়োগ করতে হবে, বিশেষত হোমিওপ্যাথির ক্ষেত্রেই এমন ঘটনা ঘটে; তাহলে তখন আপনি কোনটা করবেন? কোন চিকিৎসকের কাছে গিয়ে বলবেন আপনার ঔষধ খেয়ে আমার এই সমস্যা হচ্ছে, আপনি ব্যবস্থা নিন?
এ তো গেল একদিকের কথা, অন্য আরো অনেক ব্যাপার রয়েছে! যেমন এলোপ্যাথি এবং হোমিওপ্যাথি, দুইটা চিকিৎসা পদ্ধতি অনেকটাই পরস্পর বিপরীতমুখী। তাহলে একটু ভাবুন তো কেউ আপনাকে বা আপনার জীবনী শক্তিকে দক্ষিণ থেকে উত্তর ধাক্কা দিচ্ছে আবার কেউ উত্তর থেকে দক্ষিনে ধাক্কা দিচ্ছে, মাঝখানে পড়ে আপনার কি অবস্থা হচ্ছে?
…আরো অনেকভাবেই ব্যাপারটাকে ব্যাখ্যা করা যায়; তবে তা করতে গেলে পাঠকদের ধৈর্যচ্যুতি ঘটে, অতএব আজ এই পর্যন্তই। আশা করি আমার বক্তব্য আপনারা বুঝতে পেরেছেন।